Symposium on Origin & Development of Experimental Science : Encounter with the Modern West

সেমিনার: Symposium on Origin & Development of Experimental Science : Encounter with the Modern West (প্রায়োগিক বিজ্ঞান এর উৎপত্তি ও বিকাশঃ আধুনিক পাশ্চাত্যের মুখোমুখি)

সময়: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, শনিবার, সকাল ১০টা

স্থান: বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠান কনফারেন্স হল, ধনিয়ালাপাড়া, চট্টগ্রাম।

ভিডিও: https://youtu.be/CeLYYsKoM98


"আধুনিক প্রাশ্চাত্য সভ্যতা জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল উৎসসমূহ প্রাচ্য থেকেই পেয়েছিল" - বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সেমিনারে বক্তারা

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর সাবেক মহাপরিচালক, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ, বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নব নির্বাচিত মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুঈন উদ্দিন আহমদ খান রচিত "Origin and Development of Experimental Science: Encounter with the Modern West" (প্রায়োগিক বিজ্ঞান এর উৎপত্তি ও বিকাশঃ আধুনিক পাশ্চাত্যের মুখোমুখি) এর উপর এক সিম্পোজিয়াম ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ শনিবার, সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর ধনিয়ালাপাড়াস্থ বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুশ শরফের সম্মানিত পীর সাহেব, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী ম.জি.আ এর সভাপতিত্বে সিম্পোজিয়ামে মূল বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নাকীব। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মুঈন উদ্দিন আহমদ খান।

বায়তুশ শরফ ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিউর রহমান সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সারোয়ার আলম, গবেষক মেহেদী হাসান, মাসুদ জাকারিয়া। শুরুতেই কুরআন তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা মফিজ উদ্দিন। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে ইত্তেহাদ এর সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মিয়া, ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ড. মাহীউদ্দীন, অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন, অধ্যাপক জিয়াউর রহমান, ড. মাওলানা মাহমুদুল হক, অধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মুহাম্মদ ছলিমুল্লাহ, উপাধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মাসিক দ্বীন দুনিয়া সম্পাদক মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ, আনজুমনে ইত্তেহাদের কোষাধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, হাফেজ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, আনজুমানে নওজোয়ান এর উপদেষ্টা এ এস এম মুনিরুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসাইন, মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা মুহিব্বুর রহমান,
আনজুমানে নওজোয়ান এর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম।

বক্তাগণ বলেন, রোমান সম্রাট জাস্টিনিন ৫২৯ খ্রিস্টাব্দে যখন এথেন্সের জ্ঞানকেন্দ্র সমূহে তালা লাগিয়ে দেবার নির্দেশ জারী করেন তখন পৃথিবীর অপরপ্রান্তে নবতর আরেকটি সভ্যতার দিগন্ত উন্মোচিত হয়। ইসলামের মহান নবী (সা.) যেভাবে জ্ঞানের মর্যাদা এবং জ্ঞান অন্বেষণকারীদের প্রশংসা ও উৎসাহ জুগিয়েছেন, তাতে জ্ঞান অন্বেষার অদম্য আকাঙ্ক্ষা পুনর্বার অন্তরে অন্তরে প্রজ্বলিত হয়ে ওঠে। এভাবে বিশাল ইসলামী সভ্যতা আত্মপ্রকাশ করে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার ওপর মৌলিক গ্রন্থাবলি রচিত ও লিপিবদ্ধ হয়, গড়ে উঠে বৃহত্তর বিদ্যাপিঠ এবং প্রতিষ্ঠা করা হয় অসংখ্য গ্রন্থাগার। এভাবে ইসলামী ভূখণ্ডের বৃহৎ নগরীসমূহ জ্ঞানচর্চার লালনভূমিতে পরিণত হয় এবং সেসব স্থান আজকের ইউরোপসহ দেশি-বিদেশি অগণিত জ্ঞান-পিপাসুর পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে।

বক্তারা বলেন, এভাবে আধুনিক প্রাশ্চাত্য সভ্যতা জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল উৎসসমূহ প্রাচ্য থেকেই পেয়েছিল। গ্রীসের বিখ্যাত পণ্ডিতগণ অনেকবার প্রাচ্য ভ্রমণ করেন এবং প্রাচ্যের পণ্ডিতদের সাধনালব্ধ জ্ঞান-ভাণ্ডার থেকে অবলীলায় গ্রহণ করেন। অতঃপর স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে উক্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান ছড়িয়ে দেন। সে যুগে গ্রীকরা প্রাচ্যের জ্ঞান-ভাণ্ডার থেকে কতটুকু গ্রহণ করেছিলেন কিম্বা বিগত এক হাজার বছর পূর্বে আজকের ইউরোপ ইসলামী সভ্যতার বিজ্ঞান ও দর্শনের ভাণ্ডার থেকে কতটুকু উপকৃত হয়েছিল কিংবা মুসলমানরা গ্রীক দর্শনকে কীভাবে গ্রহণ করে এবং তাতে কতটা সংযোজন করে ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে স্বতন্ত্র গবেষণার দাবি রাখে। দুঃখজনক ভাবে সত্য, এই ইতিহাস খুব কমই আলোচনা করা হয়েছে বিশ্বে। বিশেষ করে শিক্ষিত মুসলিম যুব শ্রেণী, যারা ইউরোপীয় সূত্রাবলি হতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের তথ্যাবলি লাভ করে থাকে, তাদের কাছে এ ইতিহাস যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়নি। বক্তাগণ আরো বলেন, প্রাচীন গ্রীসে 'ন্যাচারাল ফিলসফি' বলে জ্ঞানের একটি শাখা ছিল, যেটা আজকের 'এক্সপেরিমন্টাল সাইয়েন্স' এর ডিসিপ্লিনের অনুরূপ। তবে বৈশিষ্ট্য গুলো টাইপোলজিক্যালের দিক থেকে একেবারেই ভিন্ন। 'এক্সপেরিমন্টাল সাইয়েন্স'কে মুসলিম পন্ডিতরা কুরআনের ইন্সপাইরেশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হলেও 'মডার্ণ ওয়েস্ট' সেগুলোর শুধুমাত্র পদ্ধতিগত দিক আত্মস্থ করার কারণে পশ্চিমের বিজ্ঞান বিশ্ববাসীর সামনে প্রযুক্তিকে উন্নতির উচ্চ শিখরে তুলে আনতে সক্ষম হলেও তারা জ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মেও লিপ্ত হচ্ছে।