অমর বাণী

হাদীয়ে যামান শাহ সূফী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার (রাহ.)

কাবা শরীফে ১ রাকাত নামায অন্য জায়গায় ১ লক্ষ রাকাত নামাযের সমান। মদীনা শরীফে ১ রাকাত অন্য জায়গায় ৫০ হাজার রাকাতের সমান। ইহা শরীয়তের দৃষ্টিতে। কিন্তু হাকিকতের দৃষ্টিতে “কাবা শরীফে এক রাকাত নামাযের গুরুত্ব এক লক্ষ গুণ হলে মদীনা শরীফে তিন লক্ষ গুণ বেশী হবে”। যেমন হুজুর নুর (সাঃ) এর রওজা মোবারকের সাথে রেয়াজুল জান্নাতে নামাজ পড়ার সময় যখন আত্তাহিয়্যা পড়া হয় এবং সে মুহূর্তে আচ্ছালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবিয়্যু বলা হয় তখন হায়াতুন্নাবি (সাঃ) স্বয়ং নিকট হতেই এ সালাম শুনেন ও জবাব দেন ।
দিলকে আয়না তুল্য করতে যদি চাও, দশটি খাছলত তবে দূর করে দাও। কাম, ক্রোধ, লোভ, মদ, মোহ, ক্বীনা, মিথ্যা, হারাম, গীবত ও কুধারণা। তারপর ভাল অভ্যাসগুলো নিজের ভিতর জন্মাতে অভ্যাস করতে হবে।তা হলো- খোদার নৈকট্য যদি পেতে চাও, এ দশটি খাসলত ভিতরে জন্মাও। ছবর, শোকর, সন্তোষ, একিন ও এলম, তওবা, খুলুছ, ভয়, তাওয়াককুল ও প্রেম।
হায়াত এক। দুনিয়াদারীর সাথে সাথে আখেরাতের কাজও করিতে হবে। একই দিনের ভিতর দ্বীন ও দুনিয়াম সউভয় কাজ সমাধা করতে হবে। হযরত দাউদ (আ.) এর প্রতি আল্লাহর নির্দেশ- “হে দাউদ। দুনিয়ার পাঁচ কাজের ভিতর হতে আমার এবাদতের সময় করে নাও”
খারাপ ওলামা শয়তানের এজেন্ট। তাদের ছোহবত হতে দূরে থাকবে।
ছোহবতে ছালে তোরা, ছালে কুনদ, ছোহবতে তালে তোরা, তালে কুনদ ।। অসৎসঙ্গী বিষাক্ত সর্প হতেও মারাত্মক। সর্প দংশন করলে প্রাণ যাবে কিন্তু অসৎ সঙ্গীদ্বারা সবচেয়ে অমূল্য দৌলত ঈমান হারাবার সম্ভাবনা।
আল্লাহ পাকের দরবারে দুটি জিনিসের অভাব। এ দুটি জিনিস যার নিকট পাওয়া যায় আল্লাহ পাক তাকে তত বেশী ভালোবাসেন। আহাজারী- অর্থাৎ কাকুতি, মিনতি, মোহতাজী। রোনাজারী- অর্থাৎ কান্নাকাটি।
কম খাও, কম ঘুমাও, কম কথা বল। মানুষ যখন ঘুমায়, তখন নামায পড়, অর্থাৎ তাহাজ্জুদের নামায।
সমস্ত পাপের মূল দুনিয়ার মোহাব্বত। এজিদের ভিতর দুনিয়ার মোহাব্বত প্রবেশ করার কারণে সে হযরত হোসাইন (র.) কে হত্যা করল।
মানুষ মানুষের নিকট মোহতাজী করা, হাত পাতা লজ্জাজনক। কিন্তু রাব্বুল আলামীনের নিকট হাত পাতা, মোহতাজী করা ও অনুনয়-বিনয় করা সম্মানজনক ও উত্তম।
আলাহর পবিত্র বাণীর উল্লেখঃ আমার এমন কতক বান্দা আছে ব্যবসা-বাণিজ্য বেচা-কেনা কোনকিছুই তাদেরকে আমি আল্লাহর যিকির হতে বিরত রাখতে পারে না।
একদা তিনি বলেনঃ আমি পয়সার পূজা করিনা, আমি মানুষ পূজা করিনা। আমি শুধু আল্লাহর পূজা করি, আমি যদি সাতদিনও উপবাস থাকি এবং আমার হাতে একটা পয়সাও না থাকে তবুও আমি বলব যে, আমাকে একট পয়সা দাও। এরকম কাহারো মোহতাজীর পূর্বেই আল্লাহ পাক আমাকে নিয়ে যাক।
পীর মুর্শিদের দামান শক্ত ও ভক্তি সহকারে আঁকড়ে না ধরলে নফসের ষড়যন্ত্র, ধোকা ও মন্দ হতে রক্ষা পাওয়া অসম্ভব।
বান্দা যখন আল্লাহ-কে স্মরণ করে বা যিকির করে তখন আল্লাহ পাক ঐ বান্দার সাথী হয়ে যান। আল্লাহ-কে একবার স্মরণ করলে আল্লাহ পাক বান্দাকে দশবার স্মরণ করেন।
অন্যের দোষ-ক্রটির প্রতি লক্ষ্য না করে, সর্বক্ষণ স্বীয় দোষ-ক্রটি, গুনাহ-খাতার দিকে লক্ষ্য করলে এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে, আত্ম সংশোধনের চেষ্টা থাকলে আল্লাহর নিকট মকবুল ও প্রিয়পাত্র হওয়া যায়।
মানুষ হিসেবে অনেক মা-বাবা এবং ওস্তাদের মধ্যেও দোষ-ক্রটি দেখা যায়। কিন্তু ছেলে বা ছাত্রের সে দিকে দৃষ্টিপাত করা বা বলা কখনও উচিত নহে। ইহা বেয়াদবী।
পীর-মুর্শিদের দরবারে আসা যাওয়া একমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে। সুতারং ইহা আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে শামিল।
ত্বরিকতের মূলভিত্তি হল আদব। শুরু হতে শেষ পর্যন্ত আদবই প্রধান সম্বল। যার আদব-লেহাজ যত বেশি হবে সে তত বেশি রূহানী তরক্কি লাভে সক্ষম হবে। বিনয়ের সাথে পীর মুর্শিদের আদেশ নির্দেশ মেনে চললে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয়।